dp power by developed & designed web blogs

Friday, May 9, 2014

অভিযুক্ত তিন র‌্যাব কর্মকর্তা- ফৌজদারি আইনেও বিচার হতে হবে

নারায়ণগঞ্জ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ ও খুনের সাত দিন পর র৵াবের অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে অকালীন এবং একজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে৷ এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে অন্তত প্রাথমিকভাবে মেনে নেওয়া হলো যে অভিযোগের ভিত্তি রয়েছে৷ একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোনো নাগরিকই আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন না৷ র৵াবের আলোচিত তিন কর্মকর্তা 'ছয় কোটি টাকা ঘুষ' খেয়ে সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেত৷ অবশ্য ঘটনার পরপরই তিন কর্মকর্তাকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷ কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না৷ এবং এখন যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক৷ অবসর কোনো শাস্তি নয়৷ অপহরণ ও খুনের মতো অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় বিচার হতে হবে৷ সাত খুনের মামলায় যঁাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তঁাদের কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে না পারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরাট ব্যর্থতা৷ এখন যদি অবসরে পাঠানো সাবেক সেনা ও নৌ কর্মকর্তাদেরও আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়, তাহলে আইনের প্রয়োগের বিষয়টি পরিহাসে পরিণত হবে৷
নারায়ণগঞ্জের রক্ত হিম করা ঘটনায় র৵াব, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার নির্দিষ্ট পরিসরে দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ জরুরি৷ কাউন্সিলর নজরুল আগে থেকেই তঁার জীবনের হুমকি সম্পর্কে সবাইকে জানিয়েছিলেন৷ বিষয়টি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকেও জানানো হয়৷ কিন্তু সবাই কেন নির্বিকার ছিলেন, তার রহস্য উদ্ঘাটিত হওয়া প্রয়োজন৷ এখানে সরকার ও প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে বারবার এ ধরনের ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়৷ অনেক যাচাই-বাছাই করে দেশের সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়৷ তাই তাদের প্রতি দেশবাসীর আস্থাও বেশি৷ র৵াব গঠনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করায় মানুষ এ জন্যই আশ্বস্ত হয়েছিল৷ কিন্তু বিভিন্ন অনৈতিক ঘটনায় র৵াবে কর্মরত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ হতাশাজনক৷ দু-চারজন সদস্যের পদস্খলনের কারণে পুরো বাহিনীর মর্যাদা নষ্ট হতে দেওয়া যায় না৷ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দৈনন্দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত করা উচিত কি না, সে প্রশ্নটিও বিবেচনায় আনা যেতে পারে৷ এতে সমাজে বিরাজমান কলুষতায় কেউ সহজেই প্রলুব্ধ হতে পারে বলে সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন৷ সে ক্ষেত্রে এ ধরনের নিয়োগ সাময়িক হতে পারে৷ অবশ্য জাতিসংঘ শান্তি মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যদি গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাহলে দেশের ভেতরে পারবেন না কেন, সে প্রশ্নটিও আছে৷ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে জটিল বিষয়টি পুনর্বিবেচনায় আনা যেতে পারে৷ আপাতত ন্যায়বিচারের স্বার্থে অভিযুক্ত সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হোক৷

No comments:

Post a Comment