dp power by developed & designed web blogs

Monday, May 5, 2014

শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বোধোদয়!

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি কিছুদিন আগেও গৃহকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। কিন্তু সম্প্রতি গৃহকর্মীদের এক সমাবেশে গিয়ে তাঁর বোধোদয় হয়েছে। তিনি এখন মনে করেন, গৃহকর্মীদেরও নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও সাপ্তাহিক ছুটি থাকা উচিত। আজ সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণসাক্ষরতা অভিযান এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ আয়োজনের এক পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমার বাসায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে কাজ করে একটু কিছু হলেই তাকে ঠাস করে চড় মারতাম। একটু কিছু হলে আমার ওয়াইফও মারত, গালি দিত। দুই মাস আগে গৃহকর্মীদের এক সমাবেশে যাই। এক গৃহকর্মী আমাকে বলে, "বাসায় টেলিভিশন, ফ্রিজেরও নির্দিষ্ট জায়গা থাকে। কিন্তু আমি কই ঘুমাব সেই জায়গা নাই। একেক দিন একেক জায়গায় ঘুমাই।" সেই গৃহকর্মীর কথা শুনে মনে হলো, বাসায় যে কাজ করে তার কর্মঘণ্টা থাকবে, সাপ্তাহিক ছুটি লাগবে, আমি তো তা চিন্তা করি নাই!'
রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত পলিসি ডায়ালগে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমার এ কথা আপনারা অন্যভাবে নেবেন না। আমি এত বছর ধরে রাজনীতি করি। সমাবেশে কত কথা বলি। ওয়ার্ক পেপার বানাই। গৃহকর্মীদের কথা কখনোই বলি নাই। আসলে সবার ঘর থেকেই শুরু করতে হবে।' বিশ্বব্যাংকের 'দি ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০১৩: জবস' প্রতিবেদনের বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য দাতা সংস্থা, সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিনিধিসহ অংশীদারদের সঙ্গে এ ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, গৃহকর্মীদের জন্য সুরক্ষাবিষয়ক একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এ নীতিমালার আলোকে একটি আইন করা হবে। কৃষিশ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
পোশাকশিল্প কারখানা তৈরি, কর্মসংস্থান, শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো কোনো সরকারের আমলেই সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়নি বলে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারা স্থিতিশীল ছিল না। ১৯৯০-এর পরে স্থিতিশীলতা আসে। দক্ষতা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় যে কাউন্সিল তার সভাও নিয়মিত হয় না। এর ফলে অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক ভালো নীতি আছে। রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন কারণে নীতির বাস্তবায়ন হয় না। পোশাকশিল্প কারখানার কর্মপরিবেশ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমি বিভিন্ন কারখানায় যাই। নারীরা কেমনে, কী পরিবেশে কাজ করে তা দেখার জন্য নারীদের মাঝে বসি। দীর্ঘক্ষণ বসার পর আমি ঘেমে যাই। তখন মালিককে বলি। একইভাবে নারীদের বাথরুমে যাই। নোংরা বাথরুম দেখলে লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার কথা বলি।' ডায়ালগে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে সাংসদ শিরীন আখতার, পোশাকশিল্প কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

No comments:

Post a Comment